স্টাফ রিপোর্টার: পৌষের শুরুতেই বগুড়ায় বেশ ভালভাবেই জেঁকে বসেছে শীত। দিনে সূর্যের দেখা মিললেও সন্ধ্যার পর ঘন কুয়াশা আর হিম শীতল বাতাসের এই শীতকাল সামর্থ্যবান মানুষদের কাছে বেশ উপভোগ্য হলেও সড়কের সুবিধাবঞ্চিত মানুষেরা রয়েছে নিদারুণ কষ্টে। কোনরকম ছেঁড়া বা তালিজোড়া কাপড় দিয়ে সড়কের মাঝেই শীতের এই প্রতিটি রাত কাটানো যেন তাদের কাছে দুঃস্বপ্নের মতো।
কিন্তু এরই মাঝে সড়কে ঘুরে ঘুরে বগুড়ার সড়কে থাকা ভাসমান এই শীতার্ত মানুষগুলোর মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণের মাধ্যমে উষ্ণতার পরশ ছড়িয়ে দিয়েছে ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাব। আর ঠান্ডার মাঝে সড়কে ঘুম থেকে উঠে হাতে হঠাৎ শীতবস্ত্র পেয়ে অনেকে আবেগাপ্লুত হয়ে শুধু অশ্রুসিক্ত নয়নে ধন্যবাদ জানান আয়োজকদের।
এসিআই মোটরস্ এর নির্বাহী পরিচালক সুব্রত রঞ্জন দাসের উদ্যোগে প্রতি বছরের ন্যায় মানবিক নানা উদ্যোগের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বগুড়া শহরের স্টেশন এলাকাসহ সাতমাথা, সেউজগাড়ি, সূত্রাপুর, জলেশ্বরীতলা, থানা মোড়সহ সড়কের প্রায় ২ শতাধিক ভাসমান মানুষ এবং রিক্সাচালকদের মাঝে শীতবস্ত্র হিসেবে ভাল মানের কম্বল ভালবাসার উপহার হিসেবে তুলে দেন ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাব বগুড়া।
এসিআই মোটরস্ এর সিনিয়র মার্কেটিং অফিসার (বগুড়া টেরিটরি) হাবিবুল্লাহ্ মেসবাহ্’র ব্যবস্থাপনায় স্টেশন এলাকায় শীতবস্ত্র বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া রেলওয়ে স্টেশন মাষ্টার সাজেদুর রহমান সাজু, বগুড়া রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম, উত্তরা বাইক সেন্টারের সত্ত্বাধিকারী আবু মোত্তালিব মানিক, জেলা মোবাইল ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখর রায়, গণমাধ্যমকর্মী ও যুব সংগঠক সঞ্জু রায়, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক মাহবুব হাসান চমক এবং নাফিউল নাহিদ, এসিআই মোটরস্ সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার মেহেদি হাসান, ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাবের পক্ষে সাব্বির রহমান, জালাল উদ্দিন, আরিফুল ইসলাম রাজন, নুরুজ্জামান রানা, ইফতেখারুল ইসলাম রিজভী, নূর আলম প্রমুখ।
শীতের রাতে ঘুম থেকে উঠে হঠাৎ শীতবস্ত্র হাতে পেয়ে সড়কের এই ভাসমান মানুষগুলোর অনুভূতি জানতে চাইলে হাশেম, রানা, মর্জিনাদের মতো অনেকে জানান, তাদের তিন বেলা পেট পুরে খাওয়া যখন স্বপ্ন যেখানে নেই মাথার উপরে ছাদ সেখানে প্রকৃতিও তাদের প্রতি কঠোর। প্রতি বছর যে কম্বল পায় তারা তা শীত গরম নেই সারাবছর ব্যবহার করতে হয় কারণ তা মাথার নিচে দিয়েই তো রাত কাটে তাদের। প্রতি বছর তীব্র শীতে সরকারি ও বেসরকারি অনেক মানুষ শীতবস্ত্র দিলেও এভাবে শীতের শুরুতে কেউ দেয়না তাই আবেগাপ্লুত হয়ে আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান তারা।
এদিকে সার্বিক আয়োজন প্রসঙ্গে আবু মোত্তালিব মানিকের সাথে কথা বললে তিনি জানান, এসিআই মোটরস্ এর নির্বাহী পরিচালক সুব্রত রঞ্জন দাস একজন আপামর মানবিক ব্যক্তিত্ব। তার উদ্যোগে ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাবের মাধ্যমে বগুড়ার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে শীতে শীতবস্ত্র ছাড়াও দেশের বিভিন্ন দুযোর্গকালীন সময়ে মানবিক সকল উদ্যোগ পরিচালিত হয়ে থাকে যা সত্যিই সকলকে অনুপ্রেরণা দেয়। তিনি জানান, করোনাকালীন সময়ে শত শত মানুষকে তারা খাদ্য সহায়তা প্রদানসহ ঈদ, পূজাসহ বিভিন্ন উৎসবে অসহায় মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেন। ভবিষ্যতেও ইয়ামাহা পরিবারের এমন মানবিক কার্যক্রম চলমান রাখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তারা।